Directed By- Tushar Hiranandani
Our Raing- 6.8/10
আমার মনে হয় যে এইবার থেকে আমাদের ভারতীয় সেন্সর বোর্ড বা ‘CBFC’ কে নিজের নিয়মধারা বদলে, যারা সত্য ঘটনা অবলম্বনে ছবি বানাবেন তাদের জন্য যথাযথ কড়া নিয়ম তৈরি করা উচিত যে সত্য ঘটনা অবলম্বনে বা অনুসরণ করে ছবি বানালে তাতে তার সঠিক ঘটা জিনিস গুলো দেখাতে হবে, তাতে কাল্পনিকতার ছোঁয়া থাকলেও যেন সঠিক তথ্য গুলো থাকে। কারন ছবিটি দেখে আমার মনে হলো যে পরিচালক ছবিটিতে গল্পের আসল তথ্য ও মর্যাদা নষ্ট করে নিজের কুটিল উদারনৈতিক মতামত জোর করে ঢোকানোর চেষ্টা করেছেন।
ছবিটি ভারতের সর্বাধিক বয়স্ক মহিলা শার্প সুপার জুটি ‘ চান্দ্র তোমার ‘ ও ‘ প্রকাশি তোমার ‘-এর জীবনির উপর ভিত্তি করে নির্মিত। ছবিটি দেখার আগে আমি এনাদের জীবনি ও মিডিয়ায় দেওয়া তাদের সাক্ষাৎকার দেখে যতটা প্রেরিত হয়েছিলাম, ছবিটি দেখে আমি যথেষ্ট নিরাশ হয়েছি। ‘ শুটার দাদি ‘-দের জীবনের গল্প যেকোনো পুরুষ ও মহিলার জন্য প্রেরনা, ও আসল ওয়েমেন এম্পাওয়ারমেন্ট, কিন্তু ছবিটি দেখে মনে হবে যে ছবিতে ফেমিনিজম ও লিবেরালিজম কে প্রচার করা হচ্ছে। ছবিতে দেখানো হচ্ছে যে গ্রামের সমস্ত কাজ মহিলারা করেন ও পুরুষরা শুধু তাশ খেলা, আড্ডা মারা ও স্ত্রীর পেট ফোলানোর কাজ করেন , এবং দেখানো হয়েছে যে পুরুষরা খুব জেদি ও অত্যাচারি ।
একদিন চান্দ্র ও প্রকাশি নামের দুই ৬০ বছর উর্ধ্ব বয়স্ক জা তাদের পুঁতিকে সেখানের সুটিং মাস্টারের কাছে সুটিং শেখানোর জন্য পাঠান এবং সেখানে তারা দুজন তাদের সুটিং ট্যালেন্টের সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন। তারপর আস্তে আস্তে তারা তাদের শিখতে থাকেন ও দিনের পর দিন বারিতে মিথ্যা বলে প্রতিযোগিতায় গিয়ে মেডেল আনতে থাকেন। এখানেই প্রথম গলদ, স্বামী যদি এতই অত্যাচারি হন তাহলে দিনের পর দিন তাদের স্ত্রীর মিথ্যা বিশ্বাস কি করে করেন? আসল ঘটনায় যেমন স্ত্রীদের মেডেল নিয়ে ঘরে ঢোকার জন্য তাদের স্বামীরা ও পরিবার তাদের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেন, তাদের শক্ত স্বভাবের মধ্যে যে এরুপ নরম মন বা গ্রে শেড ছিল তা ছবিতে এক ফোঁটা বর্ননা করা হয়নি। চান্দ্র দাদির এক সাক্ষাৎকারে আমি তার মুখে শুনেছি যে তার সাফল্যের পেছনে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে নিয়মিত যোগ চর্চা, তার বিন্দুমাত্র কোন উল্লেখ নেই ছবিতে। তার সাথে ১৯৭৫ সালের এমার্জেন্সির সময় ঘটা ২লক্ষ লোকের নির্বীজন করা যাতে ২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় ও যাকে হিটলারের অত্যাচারের থেকেও নির্মম বলে গন্য করা হয় তাকে অনেকাংশে ন্যায্যতা প্রতিপাদন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
ছবির আসল গলদ রয়েছে তার সময়ের উপর, একটি জিনিস যা ৩০-৪০ মিনিটে খুবই ভালো ভাবে বলা যায় তা বার বার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে ছবির ৭০% ভাগ খাওয়া হয়েছে ও যার ফলে ছবির প্রথমার্ধের বেশ কিছু অংশ পূরো ফ্ল্যাট হয়ে গেছে।
অভিনয়, প্রথমত প্রকাশ ঝাঁ স্যার একজন রাখি স্বামীর চরিত্রে মন জয় করে নিয়েছেন, তার সাথে ভুমি পেডনেকর ও বিনিত কুমার সিংহ দের পারফরম্যান্স বেশ সাবলীল। কিন্তু তাপসী পান্নুকে তার চরিত্রে একদম মানায়নি, এমনকি প্রকাশি দাদির চরিত্রে তার অভিনয় ও এক্সপ্রেশন একদম নকল মনে হচ্ছিল। তা ছারাও শাদ রান্ধাবা, নিখাত খান সহ অন্যান্যরা নিজের চরিত্র ভাল ভাবে পালন করেছেন।
আরো একটি খারাপ দিক হলো মেকাপ, খারাপ প্রসথেটিকের জন্য অভিনেত্রীদের বৃদ্ধা রুপ খুবই নকল ও উদ্ভট লাগছিল।
কিন্তু যে জিনিস গুলো ভালো তার হলো গানগুলি ও ডায়লগ, সুটিং দৃশ্য এবং অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কথার মধ্যে ব্যবহৃত হরিয়ানবি অ্যাকশেন্ট, যা একদম প্রকৃত মনে হবে।
তো এই ছিল ‘ সান্ড কি আঁখ’ ছবির রিভিউ, এক কথায় বলতে গেলে এই ছবিটি একটি ক্ষমতাবান ও সুন্দর গল্প ছবি যা মহিলাদের আসল এম্পাওয়ারমেন্ট কে প্রচার করে ও সমাজের সকল স্তরের মানুষকে প্রেরিত করে। কিন্তু তাতেও পরিচালকের জন্য তার সঠিক ও যোগ্য সন্মান পায়নি
By- Drishtanta Chatterjee